Volagonj Sadapathor - সাদাপাথর 

Volagonj Shadapathor Day Trip Full Cost & Transport Guide

 

সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর বর্তমানে জনপ্রিয় এক পর্যটন স্থান। ভারতের বর্ডারের কাছে দেশের উত্তর পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত এ জায়গা থেকে দেখা যায় ভারতের অপরূপ সুন্দর মেঘালয় পাহাড়। আর বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে গেলে চোখে পড়ে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে উড়ে যাওয়া সাদা মেঘ। সীমান্তের এপাড়ে বাংলাদেশে রয়েছে অল্প পানির খরস্রোতা নদী আর শত শত রঙ বেরঙের পাথর। বেশির ভাগ সাদা রঙের দেখেই হয়তো এর নাম দেওয়া হয়েছে সাদা পাথর।

ঢাকা থেকে একদিনেই সিলেট শহর, লাক্কাতুরা চা বাগান আর এই ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর ঘুরে আসা যায়। বর্ষাকালে ঘন সবুজ চা বাগান আর মেঘ বৃষ্টির খেলা দেখতে দেথতে এই সাদাপাথর ট্রিপ যেন একটা পার্ফেক্ট কম্বিনেশন।

আমরা চার বন্ধু গাড়ি নিয়ে ভোর চারটার দিকে রওনা দিয়ে দেই সিলেটের ভোলাগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে। রাস্তা ফাঁকা থাকায় সাড়ে আটটার মধ্যেই পৌঁছে যাই সিলেট। কীন ব্রীজ দিয়ে সিলেটে ডুকে আমরা চলে যাই পাঁচ ভাই হোটেলে। সেখানে পাঁচ টাকার পরোটা, ২০ টাকার সবজি, ৭০ টাকার মুরগি দিয়ে নাস্তা করে চলে যাই লাক্কাতুরা চা বাগান দেখতে।

শহরের ভেতরে কাছেই লাক্কাতুরা চা বাগান। বর্ষাকালের চা বাগান যেন সৌন্দর্যের অন্য এক লীলাভূমি। সবুজ চা পাতা, উঁচু নিচু টিলার গায়ে সারি সারি চা গাছ যেন পটে আঁকা ছবি। একটু পর যখন বৃষ্টি নামে তখন আরো অনেক বেশি সুন্দর হয়ে উঠে চারদিকটা। চা পাতার গায়ে পড়তে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা, ঝুম বৃষ্টির শব্দ, আকাশের কালো মেঘ...... বেশ অন্যরকম একটা পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে।

চা বাগান দেখা শেষে আমরা রওনা দিয়ে দেই ভোলাগঞ্জ এর জন্য। আম্বরখানা হয়ে এয়ারপোর্ট রোড ধরে যেতে হয় ভোলাগঞ্জ এর দিকে। রাস্তায় পড়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্ট্যাডিয়াম। স্ট্যাডিয়াম এর আশে পাশেও আছে অনেক চা বাগান। সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে আমরা যেতে থাকি সাদাপাথর এর দিকে।

সিলেট থেকে সাদাপাথর যাওয়ার রাস্তাটা বেশ সুন্দর। চারপাশে ফাঁকা ধানক্ষেত, বিস্তৃত জলাভূমি আর মাঝখান দিয়ে চলে গেছে রাস্তা। বাস, সিএনজি কিংবা বাইক, যাই দিয়ে যান না কেনো, ভালো লাগবে অনেক। বাইকে হয়তো বেশি ভালো লাগবে। প্রায় ২ ঘন্টা পর ১১ টার দিকে আমরা পৌঁছে যাই ভোলাগঞ্জ।

ভোলাগঞ্জ বাজার পাড় হয়ে একটু সামনেই রাস্তা শেষ। 'সামনে ভারতের বর্ডার' সাইন দেয়া। সেখান থেকেই চোখে পড়বে দূরে ভারতে মেঘালয়ের পাহাড়। আর মেঘের ভেতর দিয়ে উড়ে যাওয়া সাদা মেঘ। সেখান থেকে ডানদিক দিয়ে একটু সামনে গেলেই পড়বে সাদাপাথর যাওয়ার নৌকা ঘাট।

নৌকা ঘাটের টিকিট কাউন্টার থেকে ৮০০ টাকায় রিজার্ভ নৌকা নিয়ে রওনা দিয়ে দেই আমরা। যেতে যতে একপাশে বাংলাদেশের নদী আর আরেকপাশে দেখতে পারবেন ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়। ৩০ মিনিট পর আমরা পৌঁছে যাই সাদাপাথর।সেখানে দুই ঘন্টা থাকার ডিল হয় মাঝি মামার সাথে।

ঘাট থেকে নেমে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে হাজার হাজার পাথর। পাথরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া অল্প গভীর খরস্রোতা নদী। সেই নদিতে গোসল করছে মানুষ। নদীর পাশেই লকার পাবেন জাফলং এর মতো। ১০০ টাকা করে লকার। সেখানে একটু পর পর বৃষ্টি নামে আর যায়। তাই বেশি করে পলিথিন নিতে ভুলবেন না।

সাদাপাথর এর এখানে পাহার, নদী, মেঘ, বৃষ্টির খেলা দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিলাম দুই ঘন্টা। এরপর ফেরার পালা। ফেরার সময় কালো মেঘে ঘিরে যায় চারপাশ। আরো বেশি সুন্দর লাগে সবকিছু। এপাড়ে ঘাটে এসে আমরা দুপুরের খাবার খেয়ে নেই। বেশি ক্ষুধা না লাগলে শহরে এসে পাঁচ ভাই অথবা পানসী থেকে খেয়ে নিতে পারেন। ঘাটের খাবার মোটামুটি ছিলো। জন প্রতি ১৫০ টাকার মতো পড়ে ভাত, মাংস/মাছ, ডাল দিয়ে খেতে।

এরপর ঘাটের এখানে আরও কিছুক্ষণ থেকে আমরা মেঘালয়ের পাহাড় দেখতে থাকি আর কিছু ছবি তুলে নেই। মেঘ আর পাহাড় মিলিয়ে ছবিগুলা বেশ সুন্দর ই আসে।

এরপর তিনটার দিকে আমরা রওনা দিয়ে দেই এবং একবারে চলে আসি ঢাকা। আপনারা চাইলে সিলেট শহরে আরও ঘুরে রাতের বাসে আসতে পারেন।

Route 

ঢাকা - সিলেট কদমতলি - আম্বরখানা - ভোলাগঞ্জ - সাদাপাথর

 

Cost

 ঢাকা টু সিলেট - ৫৫০/-
সিলেট কদমতলি টু আম্বরখানা - ২০/- সিএনজি ভাড়া
আম্বরখানা টু ভোলাগঞ্জ - ৭০-/ বাস ভাড়া  অথবা ১০০-১২০/- সিএনজি ভাড়া
ভোলাগঞ্জ টু সাদাপাথর নৌকা ভাড়া - ৮০০/- রিজার্ভ
খাওয়া দাওয়া সব সহ ১৪০০-১৬০০/- এর মধ্যে হয়ে যাবে। 

 

যাওয়া আসা সহ ডিটেইলস ভিডিও  

 

See More